ভ্যাকসিন নেওয়ার পর হালকা জ্বর-দুর্বলতায় ভুগছে অনেকে

দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন শুরুর ১২ দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২০ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৭ জন। এর মধ্যে জ্বর, হাত ব্যথা, গা ম্যাজ ম্যাজ করা, দুর্বলতাসহ বিভিন্ন ধরণের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছে ৫৭৮ জন।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরকে না জানালেও বিভিন্ন ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন কেউ কেউ, তবে এখন
পর্যন্ত মারাত্মক কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। ভ্যাকসিন নিলে সামান্য
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতেই পারে, তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও প্রখ্যাত মেডিসিন স্পেশালিস্ট ডা এবিএম আবদুল্লাহ
বলেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেয়ার পর যে সাইড ইফেক্টের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো
সাময়িক। জ্বর বা ব্যথা হলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর বেশি করে পানি পান করতে হবে।
কারো কারো দুর্বলতার কথা শোনা যাচ্ছে সেটি মূলত সাইকোলজিক্যাল বিষয়। দুর্বল লাগলে ফল-মূল
ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং বিশ্রাম নিতে হবে। তাহলেই দুই একদিনের মধ্যে সব ঠিক
হয়ে যাবে।
সোমবার
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়েছেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের গৃহিণী লুনা বেগম (৫০)। ভ্যাকসিন
নেয়ার পর তিন দিন দুর্বলতা ছিলো তার। তবে এখন ভালো আছেন তিনি।
মঙ্গলবার
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় হালকা জ্বর হয় সাংবাদিক শাখাওয়াত লিটনের। প্যারাসিটামল
খাওয়ার পর জ্বর থেমে গেছে। তবে শুক্রবার থেকে দুর্বলতায় ভূগছেন তিনি। দুর্বলতার কারণে
স্বাভিাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
লুনা
বেগম ও শাখাওয়াত লিটনের মত অনেকেই ভ্যাকসিন নেয়ার পর একদিনের জ্বর, হাত ব্যাথা বা দুর্বলতায়
ভুগছেন বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা নাজমুল ইসলাম বলেন, "এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন নেয়ার
পর সিভিয়ার অসুস্থ্যতার কারণে কাউকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে এমন কোন তথ্য পাইনি আমরা।
ভ্যাকসিন নেয়ার পর কেউ কোন সমস্যা বোধ করলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নাম্বার ও
টিকা কার্ডে লিখে দেয়া নাম্বারে ফোন দিয়ে জানাচ্ছে। গা ব্যথা, হালকা জ্বর, ভ্যাকসিন
নেয়ায় স্থানে ব্যথা, দুর্বলতা সহ বিভিন্ন ধরণের সাইড ইফেক্টের কথা জানা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের চিকিৎসকেরা তাদের পরামর্শ ও ওষুধ দিয়ে সহায়তা করে।"
তিনি
বলেন, ভ্যাকসিনের যে সাইড ইফেক্টের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা মূলত রোগ নয়, ভ্যাকসিন শরীরে
কাজ করা শুরু করলে সামান্য সমস্যা হয়। জ্বর, ব্যথার যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা দুই একদিনের
মধ্যে ঠিক হয়ে যাচ্ছে। দুর্বলতা তিন চার দিন থাকছে। তবে এর ফলে অফিস বা স্বাভাবিক কাজকর্ম
ব্যহত হচ্ছেনা। এ সময় বিশ্রাম ও ফলমূল খেতে হবে।
যুক্তরাজ্য
সরকারের তথ্য অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর
মধ্যে রয়েছে- ফোলাভাব, ব্যথা, লালভাব, উষ্ণতা বা ইনজেকশন পুশের আশেপাশের আঘাত, অসুস্থতাবোধ,
ক্লান্তি, ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, জয়েন্ট বা পেশী ব্যথা, জ্বর, বমি,
ফ্লু জাতীয় মতো সর্দি, নাক, কাশি বা গলা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, শনিবার দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়েছে ২ লাখ ৩৪ হাজার
৫৬৪ জন। এর মধ্যে সাইড ইফেক্ট দেখা দিয়েছে ৪৫ জনের।








