জয়ের লক্ষ্যে ইতিবাচক শুরুর পরও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
লক্ষ্যটা খুব বড় নয়, ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে
করতে হবে ২৩১ রান। এই তো সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে অবিস্মরণীয়
জয় তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের চেয়ে অনেক কম করলেই দ্বিতীয় ম্যাচটি জিততে পারবে
বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরের মাঠ কিংবা টাইগারদের অতীত পরিসংখ্যান মোটেও ইতিবাচক বার্তা
দিচ্ছে না। কেননা ২৩১ রান তাড়া করে রেকর্ড গড়ে জিততে হবে টাইগারদের।
অতীত পরিসংখ্যান বদলে নেয়ার মিশনে দুই
ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল বাংলাদেশ। প্রায়
দুই বছর পর গড়েছিলেন উদ্বোধনী উইকেটে ৫০ রানের জুটি। তামিম তুলে নিয়েছিলেন নিজের ব্যক্তিগত
ফিফটি। কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। বল হাতে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ক্যারিবীয়
অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট।
চা পানের বিরতির আগে তিন উইকেট হারিয়ে
ফেলেছে বাংলাদেশ। ২৩১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে স্বাগতিকদের
সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭৮ রান। ম্যাচ জিততে এখনও ১৫৩ রান প্রয়োজন। ম্যাচ জেতানোর সকল দায়িত্ব
এখন নিতে হবে অধিনায়ক মুমিনুল হক ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমকে।
নিয়মিত বোলাররা যখন বেধড়ক পিটুনি খাচ্ছিলেন,
তখন বল হাতে নিয়েই জাদু দেখান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। তার বোলিংয়েই আউট হয়েছেন বাংলাদেশ
দলের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত শুরুর পর এ দুই উইকেট হারিয়ে
যখন বিপদে বাংলাদেশ, তখন চাপ আরও বাড়ে নাজমুল হোসেন শান্তর বিদায়ের ফলে।
অথচ রান তাড়ার মিশনে শুরুটা দুর্দান্ত
ছিল বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ড্রেসিংরুমে ইতিবাচক বার্তা
দেন তামিম। ডানহাতি পেসার আলঝারি জোসেফের বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন তিনি।
চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দৃষ্টিনন্দন কভার ড্রাইভের পর দ্বিতীয় বলে দারুণ ফ্লিকে জোড়া
বাউন্ডারি হাঁকান তামিম।
অগ্রজ সতীর্থকে এমন মারমুখী ভঙ্গিতে দেখে
অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন সৌম্য। অফস্পিনার রাহকিম কর্নওয়াল তাকে বারবার প্রলুব্ধ করেন
বড় শটের জন্য। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেননি বাঁহাতি এ ড্যাশিং ওপেনার। তবে অফস্ট্যাম্পের
ওপর বল পেয়ে ঠিকই এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে দেন তিনি।
পরে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকান আক্রমণে
এলে প্যাডেল সুইপে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন তামিম। যা কি না ১৪ ইনিংস
পর উদ্বোধনী উইকেটে বাংলাদেশের পঞ্চাশ রানের জুটির নজির। ঠিক পরের বলে রিভার্স সুইপে
চার মেরে ৪০ রানে পৌঁছে যান তামিম। তিনি ফিফটি করতে সময় নেননি একদমই। মুখোমুখি ৪৪তম
বলে ক্যারিয়ারের ২৮তম পঞ্চাশ করেন তামিম।
তবে এর আগেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। আক্রমণে
এসে নিজের প্রথম বলেই সৌম্যর বিদায়ঘণ্টা বাজান ক্যারিবীয় অধিনায়ক। ব্রাথওয়েটের করা
১৩তম ওভারের প্রথম বলটিতে স্লিপে ক্যাচ নেন কর্নওয়াল। কিন্তু সেটি আউট দেননি আম্পায়ার
রিচার্ড ইলিংওর্থ। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের রিভিউ নিয়ে ৩৪ বলে ১৩ রান করা সৌম্যকে ফেরায়
ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ৫৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ব্রাথওয়েটের ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে ফাঁদে
পা দেন তামিম। তাকে অফস্ট্যাম্পের বাইরে ড্রাইভিং লেন্থে করেন ব্রাথওয়েট। শর্ট মিড
অফে ফিল্ডার দেখেও ড্রাইভ খেলেন তামিম। কিন্তু সেই ফিল্ডারকে পরাস্ত করতে পারেননি।
আউট হয়েছেন পঞ্চাশ করার ঠিক পরপরই।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে সৃষ্ট চাপ আরও বাড়ে
চা পানের বিরতির ঠিক আগে কর্নওয়ালের বলে নাজমুল শান্তও (৩১ বলে ১১) ফিরে গেলে। দিনের
শেষ সেশনে একসঙ্গে জুটি বাঁধবেন মুমিনুল ও মুশফিক।