২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু নয় মাসে সর্বনিম্ন

দেশে আরো পাঁচজন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃতের এ সংখ্যা গত নয় মাসে সর্বনিম্ন। এর আগে ৬ মে তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৪০৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল পাঠানো এক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৬টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৯টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৬৫টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে ১৪ হাজার ৩২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৯ লাখ ৬৮ হাজার ৭৬৬টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৫ এবং মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ২৫৩। সর্বশেষ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৪২২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। এতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৩।

এ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৮২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

গতকাল মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় এদের মধ্যে তিনজন ষাটোর্ধ্ব ছিলেন। বাকি দুজন ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে ছিলেন। মৃতদের মধ্যে চারজন ঢাকা ও একজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে মারা যাওয়া ৮ হাজার ২৫৩ জনের মধ্যে ৬ হাজার ২৫২ জন পুরুষ ও ২ হাজার ১ জন নারী।

বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। দেশে সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। দুই মাস সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। তবে ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। টানা তিন সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে। দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু হয় গত ১৮ মার্চ। এর মধ্যে ২ জুলাই একদিন সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ পজিটিভ হয় এবং ৩০ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের তালিকায় বাংলাদেশে অবস্থান ৩২তম এবং মৃত্যুর তালিকায় ৩৮তম।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর দুই মাসের মধ্যে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৭৮ লাখ ছাড়িয়েছে। আর ২৩ লাখ ৭০ হাজার পেরিয়েছে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা।