বেড়েছে স্বর্ণের দাম

টানা দরপতনের পর গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে
স্বর্ণের দাম কিছুটা বেড়েছে। স্বর্ণের পাশাপাশি দাম বেড়েছে রুপার। তবে আর এক দামি ধাতু
প্লাটিনাম দরপতনের মধ্যেই রয়েছে। গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১
দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। রুপার দাম বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আর প্লাটিনামের দাম
কমেছে দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এই দাম বাড়ার ধারা
অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স
সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম
কমায় চলতি মাসে দেশের বাজারে আমরা দু’দফা স্বর্ণের
দাম কমিয়েছি। তবে এখন বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই দাম
বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশের বাজারেও স্বর্ণের
দাম বাড়ানো হবে।’
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি
মাসজুড়ে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ৫ দশমিক ৯৪
শতাংশ কমে। ফেব্রুয়ারির পতনের ধারা চলতি মাসের শুরুতেও দেখা যায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে
বিশ্বজারে স্বর্ণের দাম কমে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এই টানা পতনে স্বর্ণের দাম ৯ মাসের মধ্যে
সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়।
বিশ্ববাজারে বড় পতন হওয়ায় চলতি মাসে দু’দফায় দেশের বাজারে
স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সর্বশেষ গত ১০ মার্চ ভরিতে
স্বর্ণের দাম ২০৪১ টাকা কমায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এই সংগঠন।
৯ মার্চ অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী
কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ মার্চ থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি
ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪১ টাকা কমিয়ে ৬৯ হাজার ১১০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৫ হাজার ৯৬০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৫৭ হাজার ২১১ টাকা
এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৬ হাজার ৮৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে ২ মার্চ অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী
কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩ মার্চ থেকে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি
ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা কমিয়ে ৭১ হাজার ১৫১ টাকা বিক্রি
হচ্ছিল।
পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৮ হাজার
১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৫৯ হাজার ২৫২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ
৪৮ হাজার ৯৩১ টাকা করে বিক্রি হচ্ছিল। ৯ মার্চ পর্যন্ত এই দামে স্বর্ণ বিক্রি হয়।
এর আগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি ভরিতে স্বর্ণের
দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা কমানো হয়। সে হিসাবে চলতি বছরে তিন ধাপে দেশের বাজারে ভরিতে স্বর্ণের
দাম ৫ হাজার ৫৪০ টাকা কমেছে।
স্বর্ণের দাম কমলেও রুপার পূর্ব নির্ধারিত
দাম বহাল রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার
৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রূপার দাম ১ হাজার ৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১ হাজার ২২৫ টাকা
এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার দাম ৯৩৩ টাকা।
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানোর পর গত সপ্তাহে
বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেল। শেষ কার্যদিবসে ৮ দশমিক ৬৬ ডলার বাড়ার মাধ্যমে
সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ ডলার। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে
স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে ১ হাজার ৭২৬ দশমিক ৪২ ডলারে
থিতু হওয়া প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম গত সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৭৪৫ দশমিক শূন্য ৭ ডলারে
উঠে এসেছে।
এদিকে শেষ কার্যদিবসে দশমিক ৫৪ শতাংশ বাড়ার
মাধ্যমে গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপার দাম বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এতে প্রতি
আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ১৯ ডলার। এর পরও মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে
রুপার দাম ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে গেছে।
এদিকে স্বর্ণ ও রুপার দাম কিছুটা বাড়লেও
পতনের মধ্যেই রয়েছে আর এক দামি ধাতু প্লাটিনাম। গেল সপ্তাহে এই ধাতুটির দাম কমেছে দশমিক
৬৯ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ১১৯৬ দশমিক ৫০ ডলারে। এর মাধ্যমে
মাসের ব্যবধানে প্লাটিনামের দাম কমেছে ৫ দশমকি ৯৭ শতাংশ।







