মধ্যরাতে পাক কূটনীতিককে নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠালো ভারত
ভারতের কাশ্মিরে পেহেলগামে
বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু
সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বুধবার মধ্যরাতে নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় পাকিস্তানের
অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক সাদ আহমেদ ওয়ারাইচকে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সূত্র দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে
আনন্দবাজার পত্রিকা।
ওই প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ভারতের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, নয়াদিল্লির পাক
দূতাবাসে থাকা সে দেশের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, নৌ উপদেষ্টা, বিমান বাহিনীর
উপদেষ্টাকে ‘অবাঞ্ছিত’ (পার্সোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করা
হচ্ছে। তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে বলেও জানিয়ে দেয় ভারত।
মধ্যরাতে পাক এই কূটনীতিককে ডেকে ‘অবাঞ্ছিত’
ঘোষণার সরকারি এই নির্দেশনামাই আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির (সিসিএস) একটি জরুরি বৈঠক
অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই বৈঠকের পর রাত ৯টা নাগাদ সাংবাদিকদের
মুখোমুখি হন সিসিএসের কর্মকর্তারা। সেখানে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন। যতক্ষণ না পাকিস্তান
আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়া বন্ধ করে, ততক্ষণ সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি
স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
এছাড়াও, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৈধ
কাগজপত্র নিয়ে যারা এই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের আগামী ১ মে-র মধ্যে
পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভারত আরও জানিয়েছে, ‘সার্ক
ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প’ (এসভিইএস)-এর অধীনে কোনো
পাকিস্তানি নাগরিককে আর দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পূর্বে এই ভিসার আওতায়
পাকিস্তানিদের যত অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাও বাতিল করা হচ্ছে। বর্তমানে এই ভিসা
নিয়ে যারা ভারতে অবস্থান করছেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাশাপাশি,
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনের সদস্য সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ
নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
মঙ্গলবার পেহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫
জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি। অভিযোগ উঠেছে, ধর্মীয় পরিচয় দেখে লক্ষ্য করে গুলি
চালানো হয়েছিল। ভারতের পক্ষ থেকে তিন বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।








