সিলেটে সমন্বয়ক গালিবকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয়
কার্যনির্বাহী সদস্য ও সিলেটের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
করেছেন সিলেটের পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্ষমতার অপব্যবহার
ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার অভিযোগে তাকে মঙ্গলবার রাতে
অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারা।
রাতে প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে
গালিবকে সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাশাপাশি ঘোষিত সিলেট মহানগর আহ্বায়ক কমিটি
প্রত্যাখ্যান করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান।
এদিকে গালিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পর আজ বুধবার
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্নজন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। এমনকি গালিব
নিজেও এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন ‘মহানগর
কমিটিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অনেক ভুল হওয়ায় পেজ থেকে কমিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কমিটি
প্রকাশের পরে অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কারও কোনো স্পেসিফিক অভিযোগ থাকলে
বিভাগীয় সফরে যারা কমিটি গঠনের দায়িত্বে ছিলেন তাদের দিতে বলা হচ্ছে। কমিটি স্থগিত
থাকবে। সবকিছু সংশোধন করে পুনরায় কমিটি প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া সম্মিলিত প্রাইভেট
বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এবং সম্মিলিত মেডিকেল কলেজ, সিলেটের কমিটি গঠনের কাজ চলমান
আছে। যারা এই দুইটা ইউনিটে কাজ করতে আগ্রহী তাদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ
করতে বলা হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শাহজালাল
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
সমন্বয়ক পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। তিনি দুই দিন পরপর তাঁর মনমতো কমিটি
দিচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গায় সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়কের কোনো পদ নেই।
বক্তব্যে বলা হয়, গালিব ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও
ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। মহানগরের কমিটির আহ্বায়ক পদ
ছাত্রলীগ নেতাকে দেওয়া হয়েছে। বিগত জুলাই আন্দোলনে বুলেটকে ভয় না পেয়ে যারা সামনের
কাতারে ছিলেন, যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, যারা ভূমিকা রেখেছেন সেসব বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মহানগর কমিটিতে শতাধিক পদ
থাকলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র তিনজনকে রাখা হয়েছে। এ কমিটি তারা
প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে কুয়েটে শিক্ষার্থীদের
ওপর হামলার নিন্দা জানানো হয়।
এদিকে সমন্বয়ক গালিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও
সমন্বয়কদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে। নুর নবী নামে একজন উল্লেখ
করেন, এবার দেখার পালা কোন সমন্বয়ক কোন অপরাধে জড়িয়েছেন।
মনির হোসেন নামের আরেকজন লেখেন, সমন্বয়করা ভরসার
জায়গা হারাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের মেট্রোপলিটন
ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি ও আরটিএম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা উপস্থিত
ছিলেন।
অভিযোগ বিষয়ের জানতে আসাদুল্লাহ আল গালিবের
মোবাইল ফোনে কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।