আফগান সীমান্তে সংঘর্ষে ১৯ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে পাকিস্তানের ১৯ সেনা নিহত হয়েছেন। এতে আফগানিস্তানের তিনজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
খবরে
বলা হয়েছে, সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে চলতি সপ্তাহে
আফগানিস্তানের মূল ভূখণ্ডে পাকিস্তানের
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর। এই হামলার
পর সীমান্তজুড়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি
হয় এবং পরিস্থিতি আরও
জটিল হয়ে উঠে।
উভয়
দেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ এবং আফগানিস্তানের খোস্ত
প্রদেশের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী
বাহিনীর মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় দেশের
সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারী অস্ত্রের ব্যবহার
করেছে।
এদিকে,
আফগানিস্তান পাকিস্তানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে এ
তথ্য জানিয়েছে। এটি পাকিস্তানে হামলার
পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালানো হয়। আফগান মন্ত্রণালয়ের
দাবি, হামলাগুলো ‘অনুমানমূলক রেখার বাইরে’ (ডুরান্ড লাইন) করা হয়েছে, তবে
পাকিস্তানে হামলার বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
এ ছাড়া, আফগান সীমান্ত বাহিনী খোস্ত প্রদেশের আলি শির জেলায়
পাকিস্তানি সামরিক চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দেয়
এবং পাকতিয়া প্রদেশের ডান্ড-ই-পাতান জেলায়
দুটি পাকিস্তানি পোস্ট দখল করে। এ
সংঘর্ষের ফলে পাকিস্তান এবং
আফগানিস্তান উভয়ের মধ্যে অস্থিতিশীলতা আরও বেড়ে যায়।
প্রসঙ্গত,
ডুরান্ড লাইন, যেটি আফগানিস্তান এবং
পাকিস্তানের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক সীমান্ত,
সেটি আফগানদের জন্য একটি স্পর্শকাতর
বিষয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আফগান
সরকার কখনোই এই সীমান্তকে আনুষ্ঠানিকভাবে
স্বীকৃতি দেয়নি, যদিও আন্তর্জাতিকভাবে এটি
দুই দেশের সীমানা হিসেবে গণ্য করা হয়।
আফগানিস্তান
ও পাকিস্তান উভয়ই এই সীমান্ত
নিয়ে বিতর্কে জড়িত এবং এটি
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে বাস করা পশতুন
জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনী
২৪ ডিসেম্বর রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা
প্রদেশের বারমাল জেলায় হামলা চালায়, যেখানে অন্তত ৪৬ জন নিহত
হয়েছেন এবং বেশিরভাগই শিশু
ও নারী। এ হামলার পর
তালেবান সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকে ‘বর্বর’ এবং ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’
হিসেবে অভিহিত করে।
এ পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
শাহবাজ শরিফ শুক্রবার বলেন,
আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চাই,
তবে আমাদের নিরপরাধ নাগরিকদের হত্যা করা থেকে টিটিপি
(পাকিস্তান তালেবান) কে থামাতে হবে।
এটি আমাদের রেড লাইন।