নাসুম-জাকের যা পেরেছেন তা পারেননি রিয়াদ-মিরাজরা

শারজায় প্রথম ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও ভয়াবহ ব্যাটিং ধসে বড় পরাজয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে টিকে থাকার আশায় গতকালকের ম্যাচটি শান্ত বাহিনীর জন্য ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। এমন ম্যাচেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিল দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটাররা। যেই অ্যাপ্রোচে তাদের খেলার কথা ছিল তা উইকেটে দেখাতেই পারেনি। তাতে ফের একবার দেখা গিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের হতশ্রী ব্যাটিং। যদিও এর মধ্যে খানিকটা আশার আলো জাগিয়েছে জাকের আলী অনিক ও নাসুম আহমেদ। 

 

প্রথম ম্যাচের ক্ষত ভুলতে শনিবার (৯ নভেম্বর) টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। দলীয় ২৮ রানে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে গজনফর ফেরালে তা আরো বাড়ে। শুরু হয় ওয়ানডে ফরম্যাটে টেস্ট মেজাজে খেলা। টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার মিলে পরীক্ষা নিতে থাকে আফগান বোলারদের ধৈর্যের। সফলও হচ্ছিল। দ্বিতীয় জুটিতে ৯৩ বলে ৭১ রান তোলে তারা। সৌম্য হাত খুলতে শুরু করলে রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। ২ চার ও সমান ছক্কায় ৪৯ বলে ৩৫ রান করে আউট হন তিনি। যদিও পরে দেখা গেছে, রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন সৌম্য; বল পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। 

পরে তৃতীয় উইকেটে শান্তর সঙ্গী হন মিরাজ। তারাও ৫০-ঊর্ধ্ব জুটি গড়ে ফেলে। সেখানেও রশিদ খান বোল্ড। তারপরই যেন এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। মিরাজ যখন আউট হয় তখন ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের দলীয় রান ১৫২। এরপর স্কোর বোর্ডে আরো ৩২ রান যোগ করতে গিয়েই দলের তিন অভিজ্ঞ ব্যাটার ফেরেন সাজঘরে, আর উইকেটগুলো নেন এক জন বলারই। শুরুটা হয় তাওহিদ হৃদয়কে দিয়ে। ১৬ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলে নাগাইলিয়া খারোটির বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর ফেরেন ১১৯ বলে করেন ৭৬ রানের ইনিংস খেলা তাওহীদ হৃদয়। আর বল হাতে তৃতীয় উইকেট হিসেবে তিনি ফেরান ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। 

সর্বশেষ ওয়ানডে ফরম্যাটে তিন ইনিংসে তিনি খেলেছেন ০, ১, ২ রানের ইনিংস এবার খেলেছে তিনি ৩ রানের ইনিংস। তিনি যেন রানের সংখ্যা দিয়ে শিশুদের সংখ্যা গণনা শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। এদিকে ব্যাটারদের হঠাৎ এমন আসা যাওয়ার মধ্যে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন জাকের আলী অনিক ও নাসুম আহমেদ। সর্বশেষ ম্যাচে আঙুলের চোটে পড়া উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম ও লেগ স্পিনার রিশাদকে একাদশ থেকে সরিয়ে জাকের ও নাসুমকে মূল দলে জায়গা দেওয়া হয়। 

এ ম্যাচ দিয়েই ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে জাকেরের। তিনি ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১৪৯তম ক্রিকেটার। এছাড়া গত বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এই ম্যাচ দিয়েই মূল একাদশে জায়গা পেয়েছেন নাসুম আহমেদ। তাদের কল্যাণেই শেষ অবধি ২৫০ রান পেরুতে পেরেছে লাল- সবুজের প্রতিনিধিরা। নয়তো প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও দেখা যেত ব্যাটারদের মাঠে আসা-যাওয়ার কীর্তি।