বিশ্বব্যাংকের কাছে আরো বাজেট সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী
চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে আরো ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার ও নবনিযুক্ত বাংলাদেশ এবং ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সংস্থাটি ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের গ্রিন, রেসিলিয়েন্স, ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে ২৫০ মিলিয়ন (২৫ কোটি) করে আগামী দুই অর্থবছরে ৫০০ মিলিয়ন (৫০ কোটি) ডলার পাওয়ার প্রত্যাশা করছি। ২০২৩-২৫ সাল মেয়াদে পাইপলাইনে রয়েছে আরো ৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন (৬১৫ কোটি) ডলারের ঋণ প্রস্তাব।
অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৩৭ বিলিয়ন (৩ হাজার ৭০০ কোটি) মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান সহায়তা পেয়েছি। এর মধ্যে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬৬০ কোটি) ডলার অর্থছাড় করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত সুদ ও আসল মিলিয়ে ৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন (৬৩৬ কোটি) ডলার পরিশোধ করেছি। বিশ্বব্যাংক ২০২৩-২৭ অর্থবছরের জন্য কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) প্রস্তুত করছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মুঘল আমলে ঢাকার চারপাশে নদী ছিল। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে পুনরুদ্ধার করে শহরটিকে মুঘল আমলের চেহারা ফিরিয়ে দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে নদী দখলমুক্ত করে ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে অর্থসহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক।
পরিবেশগত পুনরুদ্ধার এবং ঢাকা শহরের চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা নিশ্চিত এবং ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য বিউটিফিকেশন অব ঢাকা নামে একটি টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রকল্প নিয়ে কাজ করায় অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করেন।
বিশ্বের দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ-২০ প্রকল্প খুব সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারিত ৯৩ বিলিয়ন (৯ হাজার ৩০০ কোটি) ডলারের আইডিএ-২০ সাইকেলকে স্বাগত জানান তিনি। পাশাপাশি বিরূপ পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের জন্য কনসেনশনাল আইডিএ তহবিল থেকে বর্ধিত সহায়তার অনুরোধ করেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান প্রমুখ।