সরকার লজ্জার সব আবরণ হারিয়ে ফেলেছে: রিজভী

সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘লাজ-লজ্জা যদি একেবারেই হারিয়ে যায় তাকে কিছু বলার থাকে না। যাদের সামান্য হারায় তাদের কিছু বললে তারা আরও লজ্জিত হয়। আর যাদের মোটেও লাজ-লজ্জা থাকে না, তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে তাদের কিছু যায় আসে না। এ সরকার লজ্জার সব আবরণ হারিয়ে ফেলেছে।’
রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এক দোয়া ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যখন ডানে-বামে সবসময় তাকাতে হয় কেউ আমাকে অনুসরণ করছে কি না। এক প্রচণ্ড ভয় এবং শঙ্কার মধ্যে আমাদের দিন-রাত যখন অতিবাহিত হয়। তখন ফ্যাসিবাদ, নাৎসিবাদ, পৃথিবীর সব আইনকে করায়ত্ত করে জনগণের ওপর যারা ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা যে অস্ত্র হানে তা নিঃসন্দেহে গোটা জাতিকে প্রেরণা দেয় এবং আমরাও অনুপ্রাণিত হই।’
২০২২ সাল হবে উন্নয়নের মাইলফলকের বছর প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘আমি বলতে চাই এ উন্নয়নের ধারায় দেশ ও জনগণ আরও কত প্রতারিত হবে? আর কত নিঃস্ব হবে।’
রিজভী বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম ৭/৮টা পিয়নের পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার আবেদন করা হয়েছে। তার মধ্যে অসংখ্য এমএ পাস আছে। এটাই হলো শেখ হাসিনার উন্নয়ন। মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার কি আমরা চিবিয়ে খাব? আপনি বলেছেন ২০২২ সাল উন্নয়নের মাইলফলক। আর গণতন্ত্রের কী হবে, কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে? এ যে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট যারা সত্য কথা বলতে গিয়ে, সত্য মন্তব্য করতে গিয়ে যাদের নিরুদ্দেশ করেছেন, যাদের বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছেন, যাদের গুম করেছেন, তাদের কী হবে, গণতন্ত্রের কী হবে? সেই কথা বলার স্বাধীনতার কী হবে?’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন আজ যে সন্তানটি জন্মলাভ করছে, ৯৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সে জন্মলাভ করছে। আর আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। এটা যে ঋণের মাইলফলক হবে, বন্দুকযুদ্ধের মাইল ফলক হবে, গুমের মাইলফলক হবে, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের কতজন গুমের শিকার হবে তা বলা মুশকিল। আগেই বলেছি যদি লজ্জা-শরম না থাকে তাদের বলেও কোনো লাভ নেই।’
সংগঠনের আহ্বায়ক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এহমল হোসেন পাইলট, হায়দার আলী লেলিন প্রমুখ।







