বিশ্বব্যাংককে আরও দুই বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের অনুরোধ
প্রাণঘাতী নভেল
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ভেতরেও বাংলাদেশে চলমান অনেক প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের আওতায় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং স্কেল আপ ফ্যাসিলিটি থেকে
আরও দুই বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সক্ষমতা প্রদর্শন করে বাংলাদেশ।
এটি বিশ্বব্যাংকের আইডিএভুক্ত (আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা) দেশগুলোর মধ্যে একক সর্বোচ্চ।
চলমান করোনা
পরিস্থিতির কারণে আইডিএ-১৯ সংক্ষিপ্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তত আরও দুই বিলিয়ন মার্কিন
ডলার বরাদ্দ প্রদানের অনুরোধ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার (৫ ডিসেম্বর)
ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি
দল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যেফার বৈঠক করেন।
সভায় বাংলাদেশ
প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে অর্থমন্ত্রী, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের
সচিব এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক
পক্ষে হার্টউইগ শ্যেফার, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন,
বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) যৌবিদা খেরুস আলাউয়া, সেশিলে ফ্রুমান,
দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক সংযুক্তি ও সহযোগিতা বিষয়ক কর্মকর্তা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ঋণ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আইডিএভুক্ত
দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যাধিক্যের দিক দিয়ে ৩য় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যার
ভিত্তিতে নায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মি হার্টউইগ
শ্যেফারের সহযোগিতা কামনা করেন।
পাশাপাশি অর্থমন্ত্রী
বলেন, প্রচলিত নিয়মে প্রকল্পের বিপরীতে লোন দেওয়ার কারণে অনেক সময় দেখা যায় যে প্রকল্প
প্রস্তুত থাকে না এবং সেগুলো প্রস্তুত করতে অনেক কালক্ষেপণ হয়ে মন্থর গতি তৈরি হয়।
এই মন্থর গতি থেকে উত্তরণের জন্য অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করেন যাতে বাজেট
সাপোর্ট আকারে প্রকল্প ঋণ দেওয়া হয়। তাহলে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব প্রকল্প
প্রস্তুত আছে সেসব প্রকল্পের জন্য অর্থছাড় করা সম্ভব হবে এবং প্রকল্পের গতি ত্বরান্বিত
হবে।
সভার শুরুতে
অর্থমন্ত্রী ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যেফারকে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন
করেন। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা ব্যাখ্যা তুলে ধরে জানান, আমাদের রপ্তানি আয়
২৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫-৪৬ বিলিয়ন ডলার।
ঋণ-জিডিপি’র অনুপাত এখনো
৪০ শতাংশের নিচে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি বিশ্বের অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশে বাড়লেও এখনো
৬ শতাংশের নিচে রয়েছে।
তিনি বিবিএসের
তথ্য তুলে ধরে জানান, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৩৮ বছরের মাথায় ১০০ বিলিয়ন ডলার জিডিপির
মাইল ফলক স্পর্শ করেছিল। আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির আগে বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাত্র ১২ বছরের মাথায় তা ৪ গুণ বেড়ে ৪১১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
চলমান করোনার
সময়ে দেশের ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখার লক্ষ্যে বর্তমান
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের প্রোগ্রামেটিক রিকভারি অ্যান্ড রিজিলেন্স ডেভলপমেন্ট
পলিসি ক্রেডিটের আওতায় ৫০ কোটি ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসেবে দ্রুত ছাড় করার প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।