এফআইসিসিআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদন ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা’ মোড়ক উন্মোচন
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে
বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত রোডম্যাপ তুলে ধরে ফরেন ইনভেস্টরস চ্যাম্বার অব কমার্স এন্ড
ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক একটি
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
রোববার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে
আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এফআইসিসিআইয়ের পক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনটি
প্রস্তুত করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী
এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর
রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনটিতে কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি
ও সবুজ অর্থায়নের (গ্রিন ফাইন্যান্স) মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত
করা হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান তার বক্তব্যে
বলেন, বাংলাদেশ বিদেশী বিনিয়োগকারিদের জন্য উন্মুক্ত। আমাদের জনগনও কাজ করতে আগ্রহী।
সরকার সবসময় বিনিয়োগকারিদের পাশে আছে। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে
উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে বিনিয়োগকারিদের বিভিন্নখাতে বিনিয়োগের আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত
রাষ্ট্র হতে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এতে অর্থনীতির পরিচালনার
মূল চালক হতে পারে তিনটি খাত- কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়ন। এই তিনটিকে
প্রধান করে নীতি প্রণয়ন করলে বাংলাদেশ একটি স্বাতন্ত্র্যময় অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হতে পারে।
২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপির বিপরীতে বিদেশি বিনিয়োগ ছয়গুণ ও রপ্তানি ৬৬ শতাংশ বাড়তে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ
বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিতে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- মাথাপিছু আয় বাড়ানো। এ জন্য দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে রপ্তানি
বাড়াতে হবে। এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার
আদায়ে জোর প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি। সালমান এফ রহমান বলেন, শুল্কমুক্ত বাজার
সুবিধা নিশ্চিতের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বিদেশি বিনিয়োগ। গত এক দশকে বাংলাদেশ অনেক প্রবৃদ্ধি
অর্জন করলেও জিডিপির অনুপাতে বিদেশি বিনিয়োগ খুবই কম।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড
ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, বিনিয়োগকারীদের
জন্য প্রমাণিত সত্য হচ্ছে, তারা যেই দেশে সুযোগ-সুবিধা পাবে সেই দেশেই বিনিয়োগ করবে।
তাই বিনিয়োগ চাইলে অবশ্যই ব্যবসা সহজীকরণ নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, দেশি বা বিদেশি যে কোনো বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ
প্রক্রিয়ার সহজীকরণ চায়। তাই যে দেশ যত বেশি সহজ করবে সেই দেশে তত বেশি বিনিয়োগ যাবে।
এশিয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। গত কয়েক বছরে এখানে বিনিয়োগকারীদের
জন্য নীতি সহজীকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে বর্তমানে একটা অবস্থানে পৌঁছেছে।
এফআইসিসিআইয়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও
মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি ম্যানেজার স্বপ্না ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে
অন্যান্যের মধ্যে এফআইসিসিআই সভাপতি ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
রূপালী হক চৌধুরী, এফআইসিসিআই সহসভাপতি ও সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম
এইচ এম ফাইরুজ, স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, পলিসি এক্সচেঞ্জ
বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।