‘খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয় যে অভিমত দিয়েছে, সে অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারস খালেদা জিয়ার
সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে
সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। এর আগে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও
৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মতামত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে একটা
আবেদন এসেছিল। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আইন মন্ত্রনালয়
যে অভিমত দিয়েছিল সে অনুযায়ী প্রক্রিয়া চলছে।’
তিন দফায় ৬ মাস করে ১৮ মুক্তির মেয়াদ শেষ
হওয়ার আগে আগে তাকে স্থায়ীভাবে মুক্ত করে দিতে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল।
তবে আইন মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থায়ীভাবে মুক্ত করার এখতিয়ার আদালতের।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত ৭ সেপ্টেম্বর
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আবেদনের বিষয়ে মতামত জানান। তাতে তিনি মুক্তির মেয়াদ আরও ৬
মাস বাড়ানোর সুপারিশ করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করার পরেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ
জারি হবে।
আগের ৩ দফার মতো এবারও বিদেশে না যাওয়া
এবং বাড়িতে চিকিৎসার শর্তে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ
ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। পরে উচ্চ আদালতে আপিল
করলে সাজা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
উচ্চ আদালতের আদেশের পর দিন জিয়া জিয়া
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় হয় বিচারিক আদালতে। এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড
পান বিএনপি নেত্রী। ফলে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর।
দুই মামলায় জামিন পেতে বিএনপির আইনজীবীদের
চেষ্টা ব্যর্থ হলে বিএনপি নেত্রীর স্বজনরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন নিয়ে
যান।
সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত
হলে সাবেক সরকার প্রধানকে দুই শর্তে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে বিএনপি নেত্রী ফেরেন
তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায়।
শর্ত দুটি হলো- বিএনপি নেত্রী দেশেই চিকিৎসা
নেবেন এবং তিনি বিদেশে যাবেন না।
গত এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত
হলে বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে সরকার
সে দাবি নাকচ করে। জানানো হয়, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আর তিনি তা গ্রহণ
করলেই কেবল বিদেশে যাওয়ার সুযোগ আছে।
দ্বিতীয় আরেকটি পথ হলো আদালত থেকে নির্দোষ
প্রমাণ হয়ে আসা। কিন্তু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আপিল বিভাগে আর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট
মামলায় হাইকোর্ট বিভাগে শুনানিতে বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীরা কোনো আগ্রহই দেখাচ্ছেন না।
খালেদা জিয়া যখন বন্দিত্ব থেকে মুক্তি
পেয়ে বাসায় ফেরার পর তার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ পরে আরও ছয় মাস করে দুই দফায় বাড়ানো
হয়।
তৃতীয় দফায় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর। এবার চতুর্থ দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়লে তার আরও ছয় মাস কারাগারে
যেতে হবে না।
বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে এই দুটি মামলা
ছাড়াও আরও অন্তত ৩০টি মামলা আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মামলা অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায়
আছে।