বিল্ডট্রেড গ্রুপের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা
অধিদপ্তর পাইপ উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ডট্রেড গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত
বসুন্ধরা স্টীল কমপেক্সের ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্ত করে ৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ভ্যাট
ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় ভ্যাট গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে
ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করে।
ভ্যাট গোয়েন্দার সহকারী পরিচালক মো. মাহিদুল
ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির জুলাই, ২০১৫ হতে জুন,২০১৯ সময়ের তদন্ত কার্যক্রম
পরিচালনা করে।
প্রতিষ্ঠানটির দাখিলকৃত সি.এ ফার্মের বার্ষিক
অডিট প্রতিতবেদন, মাসিক দাখিলপত্র এবং বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠান জমাকৃত ট্রেজারি চালানের
কপিসহ অন্যান্য দলিলাদি হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের আড়াআড়ি যাচাই ও পর্যালোচনা করে মামলার
প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া তদন্তকালীন প্রতিষ্ঠানের আত্মপক্ষ সমর্থনে বিভিন্ন
তথ্যাদি ও বক্তব্যও আমলে নেয়া হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দারা জানায়, প্রতিষ্ঠানটির
আমদানিকৃত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসআরও সুবিধায় আমদানি করে পণ্যের আকার
ও আকৃতি পরিবর্তন না করে অধিকাংশ পণ্য অন্য প্রতিষ্ঠানের নিকট বাণিজ্যিক ব্যবসায়ী হিসেবে
বিক্রি করা হয়েছে। আমদানিকৃত পণ্য আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল নয়। এ ক্ষেত্রেও
এসআরও সুবিধার অপব্যবহারের ফলে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট বাবদ ১ কোটি ৮৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪১৫
টাকা, কাস্টম ডিউটি বাবদ ৯৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৪ টাকা এবং আরডি বাবদ ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬১
টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে
নিবন্ধিত হওয়ায় বার্ষিক অডিট রিপোর্ট তৈরি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর
ব্যতিত তদন্ত মেয়াদের পরবর্তী সময়ের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট দেখাতে পারেনি এবং তারা আয়কর
অফিসেও বার্ষিক অডিট রিপোর্ট দাখিল করেনি। তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠান ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে
সিএ ফার্ম প্রণীত অডিট রিপোর্ট অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি উৎসে কোন ভ্যাট কর্তন করেনি। কিন্তু
প্রতিষ্ঠানটির এ খাতে প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ পাওয়া যায় ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ টাকা। এক্ষেত্রে
প্রতিষ্ঠানটি উৎস খাতে কোন ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট ফাঁকি বাবদ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার
৬৪ টাকা উদঘাটন করা হয়।
উৎসে খাতে এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে
মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৪৬ লাখ ২২ হাজার ৮৬৭ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য।
এছাড়া আরও কয়েকটি খাতে প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত
ভ্যাট বাবদ ২ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৮৫ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। এই ফাঁকির
উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৬৮ লাখ ৬৭ হাজার
৯২২ টাকা সুদ টাকা প্রযোজ্য। সবমিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকার
ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।