মিনু-দুলুসহ বিএনপির ৪ নেতার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর
রহমান মিনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ চার নেতার
নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায়
বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরের দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ (আমলি আদালত
বোয়ালিয়া/রাজপাড়া) এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম এ পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন- রাজশাহী নগর
বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মােসাদ্দেক হােসেন বুলবুল এবং নগর বিএনপির সাধারণ
সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন।
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা এবং সরকার উৎখাতের
হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে দায়ের করা এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নগরীর রাজপাড়া থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে একই আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে রাজশাহীতে
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন মর্মে
এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
আদালত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আদালত আগামী ২৬
এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
গত ২ মার্চ বিকেলে নগরীর মাদরাসা মাঠ সংলগ্ন
একটি কনভেনশন সেন্টারে রাজশাহী নগর বিএনপির আয়োজনে বিভাগীয় সমাবেশ হয়। নগর বিএনপির
সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট
শফিকুল হক মিলনের সঞ্চালনায় ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন মিজানুর রহমান মিনু। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মিনু বলেন, ‘আজ রাত, কাল আর
সকাল নাও হতে পারে। ৭৫ মনে নেই? সেই সমাবেশে মিনু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানকেও কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন।
মিনুর এই বক্তব্য প্রচারের পর থেকেই প্রতিবাদে
মুখর হয়ে উঠে নগর আওয়ামী লীগ। পরদিন (৩ মার্চ) এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
সেখানে মিনুকে জাতির সামনে ক্ষমা চাইতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন নগর আওয়ামী লীগের
সভাপতি ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ক্ষমা না চাইলে মিনুর বিরুদ্ধে
মামলা করার ঘোষণা দেন লিটন।
এরই মধ্যে ৭ মার্চ বিতর্কিত বক্তব্যের
কারণে দুঃখ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন মিজানুর রহমান মিনু। ওই বিবৃতিতে তার বক্তব্যে
ষড়যন্ত্র না খোঁজার অনুরোধ জানান তিনি।
এরপর ৯ মার্চ রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল জলিলের কাছে পেনাল কোডের ১২৩ (এ)/ ১২৪ (এ)/৩২ ধারায় বিএনপির
এই চার নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ জমা দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের
আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসকের দফতর হয়ে সেই আবেদন যায়
নগর পুলিশ কমিশনারের দফতরে। সেখান থেকে যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ১৫ মার্চ স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয় বিএনপির চার নেতার নামে মামলার অনুমোদন দেয়। এর পরদিন ১৬ মার্চ অ্যাডভোকেট মোসাব্বিরুল ইসলামের হয়ে মামলাটি আদালতে
দাখিল করেন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার।