ভোমরা স্থলবন্দরের বেড়েছে ব্যস্ততা

ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরে বেড়েছে
ব্যস্ততা। তবে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হলেও এটির সক্ষমতা এখনো বাড়েনি। ফলে বন্দর দিয়ে সব ধরনের
পণ্য আমদানি করা যায় না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দর দিয়ে সব পণ্য আমদানি করতে পারলে সরকারের
রাজস্ব আয় যেমন বাড়বে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে ভোমরা বন্দর দিয়ে ৭৭টি পণ্য আমদানির
অনুমতি রয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৩ সাল থেকেই পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে
কার্যক্রম শুরু করে ভোমরা। তবে এত বছর পরও পূর্ণাঙ্গ বন্দরের যে সক্ষমতা থাকা দরকার,
তেমন অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বন্দর দিয়ে চাইলেও এ তালিকার বাইরের কোনো
পণ্য আমদানি করা যায় না।
তবে বন্দরসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূর্ণাঙ্গ বন্দরের সক্ষমতা
না থাকায় ভোমরা বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়া সম্ভব নয়। সব বৈধ পণ্য
আমদানি করতে হলে ওয়্যারহাউজের অবকাঠামো উন্নয়নসহ ভারী যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রয়োজন। এর
কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ, অনেক সম্ভাবনা থাকার
পরও সুযোগ-সুবিধা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সব ধরনের বৈধ পণ্য আমদানির
অনুমতি দিলে সরকারের রাজস্ব বহুগুণ বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
জানা গেছে, ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করার দীর্ঘদিনের
দাবি ছিল ব্যবসায়ীদের। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার
শ্যামনগর সফরে এসে ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর
২০১৩ সালে ভোমরা বন্দর পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। তবে আট বছর পার
হলেও পূর্ণাঙ্গ বন্দরের সক্ষমতা তৈরি করতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ভোমরা বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়শনের সাধারণ
সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, দেশের অন্য যেকোনো বন্দরের তুলনায় ভোমরা অনেক
সম্ভাবনাময়। কিন্ত বরাবরই এ বন্দর পণ্য আমদানিতে বৈষম্যের শিকার। এ বন্দর ব্যবহারকারী
ব্যবসায়ীরা সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে পারেন না। অথচ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ২০১৩
সাল থেকে কাগজ-কলমে ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তিত করা হয়েছে।
তার দাবি, পূর্ণাঙ্গ বন্দরের সুযোগ-সুবিধা পেলে ভোমরা রাজস্ব
আয়ে দেশের প্রথম স্থান অর্জন করতে পারত। তিনি বলেন, ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী নামে
খ্যাত কলকাতার সঙ্গে এত ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্য কোনো বন্দরের নেই। তাছাড়া কলকাতার
সঙ্গে দূরত্বও খুবই কম। ফলে এখানে যত সহজে পণ্য আমদানি করা যাবে, তা অন্য কোনো বন্দরে
যাবে না।
এ বিষয়ে ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন বণিক বার্তাকে বলেন, সব ধরনের পণ্য আমদানিতে যে সক্ষমতার দরকার, তা ভোমরা বন্দরের নেই। একটি বন্দরে সব পণ্য আমদানি করতে হলে অনেক বড় ওয়্যারহাউজ লাগে। সেখানে ভারী ক্রেন বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন প্রয়োজন। পাশাপাশি ভোমরার বিপরীতে ঘোজাঙ্গাতেও বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার। তবে শিগগিরই ভোমরা বন্দরে কাস্টমস হাউজসহ বন্দরের অন্য সব অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।







