আমদানি পরিশোধের চাপ, অস্থিতিশীল হচ্ছে ডলারের বাজার
কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের কড়াকড়িতে প্রায় তিন সপ্তাহ স্থিতিশীল থাকার পর ব্যাংকগুলোতে ওভারডিউ পেমেন্টের চাপ বাড়তে থাকায় রেমিট্যান্স ডলারের বাজার আবার অস্থিতিশীল হতে শুরু করেছে।
অন্তত
আটটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে, রেমিট্যান্স ডলারের
ক্রয়মূল্য এখন বেড়ে ১২২
দশমিক ৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে
এই ডলারের দাম অন্তত ৫০
বেসিস পয়েন্ট বেড়েছে। এর মধ্যে গতকাল
মঙ্গলবারই বেড়েছে ২০ বেসিস পয়েন্ট।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে ব্যাংকগুলো এখনো
দর ১২২ টাকা দেখাচ্ছে।
ডিসেম্বরের
শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক
মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে ব্যাংকগুলোর জন্য
রেমিট্যান্স ডলার কেনাবেচার সর্বোচ্চ
দর ১২২ টাকা নির্ধারণ
করেছিল। একই সঙ্গে এক
নির্দেশনা জারি করে বলা
হয়, ডলার কেনাবেচার মধ্যে
সর্বোচ্চ ব্যবধান ১ টাকার বেশি
হওয়া যাবে না। নিয়ম
ভাঙলে জরিমানাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
নির্দেশনা
মেনে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স ডলারের দর ১২১ দশমিক
৫০ থেকে ১২২ টাকার
মধ্যে রেখেছিল। তবে ওভারডিউ পেমেন্টের
চাপ বাড়ায় ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডলার সংগ্রহের প্রতিযোগিতা
তীব্র হয়েছে। ফলে দরও বেড়ে
যাচ্ছে।
গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ
ব্যাংকের অথরাইজড ডিলারস ফোরামের সভায় দেওয়া নতুন
নির্দেশনা এই চাহিদা আরও
বাড়িয়ে দিয়েছে। এক বৈঠকে ব্যাংকগুলোকে
সাধারণ আমদানি ও ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির সব ওভারডিউ পেমেন্ট
দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক
জানিয়ে দেয়, নির্দেশনা না
মানলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে
রেমিট্যান্স ডলারের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়।
ফলে গতকাল গত ২৮ জানুয়ারি
একদিনেই দর ২০ বেসিস
পয়েন্ট বেড়ে যায়।
একটি
বিদেশি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের
কান্ট্রিহেড বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পর ডলারের বাজার
কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। তবে গত
কয়েক সপ্তাহে তা আবার অস্থির
হতে শুরু করেছে।
তিনি
আরও বলেন, আমাদের কাছ থেকে ব্যাংকগুলোর
ডলার কেনার আগ্রহ অনেক বেড়েছে। বিশেষ
করে রাষ্ট্রায়ত্ত কিছু ব্যাংক বেশি
দামে রেমিট্যান্স ডলার কিনতে আগ্রাসীভাবে
প্রতিযোগিতা করছে। ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে আমি স্বাভাবিকভাবেই
বেশি দর দেওয়া চুক্তিটাই
গ্রহণ করব।
রাষ্ট্রায়ত্ত
একটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান,
তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সহায়তা
পাচ্ছেন না। পাশাপাশি আন্তঃব্যাংক
বাজারেও চাহিদামতো ডলার পাওয়া যাচ্ছে
না।
অন্যদিকে,
প্রতিদিনই সরকারি এলসি পরিশোধ করতে
হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ওভারডিউ পেমেন্ট পরিশোধের চাপ আরও বাড়িয়েছে।
ফলে বাধ্য হয়েই ব্যাংকগুলো কিছুটা
বেশি দামে রেমিট্যান্স ডলার
কিনছে, যাতে এসব শর্ত
পূরণ করা যায়।