সংস্কারের জন্য অবশ্যই সময় দিতে হবে

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি। সংস্কারের জন্য অবশ্যই সময় দিতে হবে। নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও নাগরিকদের ভূমিকা শীর্ষক ছায়া সংসদে (বিতর্ক) বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের পর নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হচ্ছে সরকার। সরকার সহায়তা না করলে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পক্ষেও সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করা সম্ভব হবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনে যারা অপরাধ করেছেন, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। এ প্রতিবেদনের আলোকে অর্ন্তবর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা যেতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভোটার তালিকা সংশোধন ও হালনাগাদ করা জরুরি। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে অনেক গণমাধ্যম প্রকৃত তথ্য দেয়নি। নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গত তিনটি নির্বাচনে কিছু গণমাধ্যম সত্য কথা বলেনি। আবার কেউ কেউ সত্য গোপন করতে বাধ্য হয়েছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নারী ও প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এ এম এম নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নবগঠিত নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃক্ষের পরিচয় তার ফলেই। তবে এই ইসির জন্য বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। কারণ, গতবারের মতো এবার রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কোনো চাপ নেই।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ তাঁর বক্তব্যে ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কারের কাজ শেষে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচন বিলম্ব হলে পতিত সরকার দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে কমিশন ও প্রশাসনে যারা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে দিকনির্দেশনা প্রদান করতে হবে। যেসব আইন নির্বাচনের খবর পরিবেশনে বাধা তৈরি করে, তা বাতিল করা দরকার।

এদিন ছায়া সংসদে রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে তেজগাঁও কলেজ বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মশিউর রহমান খান, সাইদুর রহমান ও একরামুল হক সায়েম। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।