কারা হেফাজতে বিএনপি নেতার মৃত্যু, তদন্তের দাবি পরিবারের

ঢাকায় কারা কর্তৃপক্ষের হেফাজতে আবুল বাশার (৩৬) নামের এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে তাঁকে মৃত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হয়। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মালিবাগ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের এক দিন আগে ২৬ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

 

তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারা কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবার বলছে, তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক।

 

মৃত বাশারের স্ত্রী সোমা বেগম হাসপাতালে জানান, পশ্চিম মালিবাগের সাফেনা হাসপাতালের পাশ থেকে গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় বাশারকে আটক করে পুলিশ। বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে তখন ধরপাকড় চলছিল। আরও অনেকের সঙ্গে তাঁকেও আটক করা হয়। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল দুপুরে স্বামীর ব্রেন স্ট্রোকের খবর পান তিনি। এরপর হাসপাতালে এসে দেখেন তাঁর স্বামী বেঁচে নেই।

 

সোমা বলছেন, তাঁর স্বামীর কোনো অসুখ ছিল না। তাহলে গ্রেপ্তারের পর হঠাৎ কী হলো? কেন তিনি মারা গেলেন? তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

 

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ সমকালকে বলেন, হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন আবুল বাশার। তাঁর পেটে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। গতকাল কারাগারে অসুস্থ হওয়ার পরপরই তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা যায়, মৃত অবস্থাতেই তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।

 

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যু কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এর আগে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।

 

পারিবারিক সূত্র জানায়, ঢাকার মালিবাগে আবুল বাশারের চায়ের দোকান ছিল। তিনি ওই এলাকার একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার অষ্টগড়িয়া নয়া পাড়া এলাকায়। তাঁর বাবার নাম আবু বক্কর সিদ্দিক।

 

রমনা থানার ওসি আবুল হাসান সমকালকে বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতার একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন তিনি সুস্থ ছিলেন। ওই অবস্থাতেই তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গ্রেপ্তারের পর আবুল বাশারকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি বলেও দাবি করেন ওসি।

 

এর আগে গত ১০ আগস্ট কারা হেফাজতে ঢামেক হাসপাতালে মারা যান বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী। তিনি ব্রেন স্টোক করেন বলে জানানো হয়েছিল। তাঁকে ২৯ জুলাই গ্রেপ্তার করেছিল কদমতলী থানা পুলিশ।