শুরুতে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
চেক নগদায়ন হওয়ার আগেই শেয়ার
কেনার সুযোগ দেওয়ার পর সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (২ নভেম্বর) লেনদেনের
শুরুতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। লেনদেনে অংশ
নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি
মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে লেনদেনে ভালো গতি দেখা যাচ্ছে।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে
(ডিএসই) ৪৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান
মূল্যসূচক বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট। আর লেনদেনে হয়েছে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের
ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক
প্রতিষ্ঠান। অবশ্য দুই বাজারেই দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা
প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের
শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক
আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা
বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০টা ২ মিনিটে ডিএসইতে ১২১টি
প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে
১০টির। আর ১৬৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ২৮ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে
ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৭ পয়েন্ট। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। এ
সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৫৮ কোটি ৮৩ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩
কোটি ১৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৮৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির,
কমেছে ৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির।
এর আগে চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না বলে
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যে নির্দেশনা দিয়েছিল মাস
না পার হতেই মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
নতুন নির্দেশনা দিয়ে বিএসইসি বলেছে— এখন থেকে
ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের থেকে চেক, পে-অর্ডার ডিমান্ড
ড্রাফট বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত অন্য কোনো মাধ্যমে টাকা পেলে সেই টাকা নগদ করার
আগে লেনদেন করতে পারবে। তবে, এ সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিএসইসি চারটি শর্ত
দিয়েছে। এ চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে ব্রোকারেজ হাউজের জন্য। বাংলাদেশের
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বলে দাবি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির।
চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনার সুযোগ দিয়ে জারি করা
এ নির্দেশনায় গ্রাহককে অনলাইনে টানা স্থানান্তরে উৎসাহ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে
বিএসইসি। সেইসঙ্গে বিএসইসির শর্ত বাস্তবায়ন করতে ডিএসই, সিএসই এবং মার্চেন্ট
ব্যাংক ও ব্রোকারেজগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বিএসইসির দেওয়া চার শর্ত:
>>> বিনিয়োগকারীর জমা দেওয়া চেক যদি ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংক
সেদিন বা পরের কর্মদিবসে ব্যাংকে জমা না দেয়, তাহলে পরের এক বছরের জন্য আইপিওতে
যোগ্য বিনিয়োগকারীর সুযোগ সুবিধা হারাবে তারা।
>>> সেই চেক যদি বাউন্স করে, অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে যদি
সমপরিমাণ টাকা পাওয়া না যায়, তখন ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে সে
টাকা দিতে হবে। সেটিও যদি না হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান আইপিওতে এক বছরের জন্য সব
সুবিধা হারাবে।
>>> যে গ্রাহকের চেক বাউন্স করবে, তিনি পরের এক বছর
পুঁজিবাজারে আর লেনদেন করতে পারবেন না।
>>> প্রতিটি স্টক ব্রোকারকে ডিজঅনার চেকের তালিকা মাস শেষ
হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিএসইসিকে পাঠাতে হবে।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর জারি করা বিএসইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়,
চেকের টাকা নগদায়নের আগে তা দিয়ে শেয়ার কেনা যাবে না।
বিএসইসি থেকে আসা এমন নির্দেশনার শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা
দেখা যায়। সেইসঙ্গে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে চেক দিয়েই শেয়ার কেনার
সুযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে এখন আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো
বিএসইসি।