বিদেশ থেকে শুধু বৈধ টাকা দেশে আনলে কর সুবিধা

বাজেট
ঘোষণার প্রায় দুই মাস পর বিদেশ থেকে কম কর দিয়ে অর্থ দেশে এনে কর নথিতে দেখানোর সুবিধার
ব্যাখ্যা দিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল
মুনিম। তিনি জানিয়েছেন, কালোটাকা নয়, বিদেশে থাকা শুধু বৈধ টাকা দেশে এনে কর নথিতে
দেখানো যাবে।
গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। সেগুনবাগিচার এনবিআরের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত এক মাসে এ সুযোগ কেউ নেয়নি। আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়। এ জন্য করের দায়মুক্তিও দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অনেক নাগরিকেরও অন্য দেশে বৈধভাবে আয় সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশে তা অলস পড়ে আছে। ওই সব দেশে ব্যাংকসুদের হার কম। আমরা এ ধরনের সুযোগ দিয়ে তাঁদের অর্থ দেশে আনতে উৎসাহ দিতে চাইছি। কোনো প্রশ্ন করা হবে না। এ ধরনের অর্থ দেশে এলে অর্থনীতিতে তা বিনিয়োগ হবে। ভবিষ্যতে সেখান থেকেও কর মিলবে।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কালোটাকার কথা বলছি না। অপ্রদর্শিত আয়ের কথা বলছি, নানা কারণে এ ধরনের অলস পড়ে থাকা অর্থ দেশে আনতে পারছেন না অনেকে।’ চলতি অর্থবছর এক বছরের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদেশ থেকে আনলে মাত্র ৭ শতাংশ কর দিয়ে তা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ সুযোগ নিলে এনবিআরসহ অন্য কোনো সংস্থা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করবে না। পাশাপাশি বিদেশে সম্পদ বা অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি হিসেবে সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করার ক্ষমতা কর কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের সদস্য (আয়করনীতি) সামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারকারীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় এ সুযোগ দিয়েসফল হয়েছে। আমরা আশা করছি, ভালো সাড়া পাব। অর্থ পাচারকারীদের জন্য দেওয়া এ সুযোগ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে যে টাকা আসবে, তা যুক্ত হবে অর্থনীতির মূল ধারায়। এতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে।’ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পাওয়া এবং তার বিপরীতে রাজস্ব খাত সংস্কার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের সঙ্গে আইএমএফের সফর করা একটি নিয়মিত প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়েছে। রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে ভবিষ্যতে তাঁদের সঙ্গে চূড়ান্তভাবে বসব।’সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়—জ্বালানি তেলের বর্ধিত দামের বোঝা কমাতে শুল্ক-কর কমানো হচ্ছে কি না? উত্তরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটি দীর্ঘমেয়াদি নীতি সিদ্ধান্ত। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এই ধরনের কোনো নির্দেশনা আসেনি। এখন খরচের বোঝা মনে হচ্ছে। একসময় তা সমন্বয় হয়ে যায়।’ পেট্রোবাংলার বকেয়া আদায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যুক্তিসংগত পাওনা থাকলে অবশ্য আদায় করা হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদায়ী অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর। অনুষ্ঠানে এনবিআরের সদস্য মান্নান শিকদার, জাকিয়া সুলতানা, মইনুল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।







