ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে বাড়ানো হচ্ছে সুবিধা
সংখ্যা কমিয়ে ট্যাক্স কার্ডের
সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে ‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা’
সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে নীতিমালার খসড়া
তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বর্তমানে দুটি নীতিমালার আওতায় সারা দেশে মোট ৬৬৬ জন করদাতাকে ট্যাক্স কার্ড ও
সম্মাননা সনদ দিচ্ছে এনবিআর। জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা, ২০১০ এর আওতায় ১৪১ জন
এবং জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময় আয়কর প্রদানকারী করদাতাদের পুরস্কার প্রদান
নীতিমালা, ২০০৮ এর আওতায় ৫২৫ জন করদাতাদের সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। এ দুটি নীতিমালা
বিলুপ্ত করে ‘জাতীয় ট্যাক্স কার্ড নীতিমালা, ২০২২’
খসড়া বানানো হয়েছে। এতে ট্যাক্স কার্ডের সংখ্যা কমিয়ে ২১৭টি করা হচ্ছে।
খসড়া
নীতিমালা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ করদাতা ৩ ব্যক্তি এবং ৪ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও
ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১১টি প্লাটিনাম ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে। এছাড়া
সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের (বিশেষ শ্রেণী) ১৩টি,
পেশাজীবীদের ১০টি, খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ কর পরিশোধকারী কোম্পানি করদাতা ৩০টি,
ফার্ম ও ব্যক্তি সংঘ পর্যায়ে ১টি, জেলাভিত্তিক সর্বোচ্চ করদাতাদের (পুরুষ ও
মহিলা) ১৫২টি ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হবে।
আগের সব
সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি প্লাটিনাম ট্যাক্স কার্ড প্রাপ্ত করদাতাদের জন্য
সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে। যেমন প্লাটিনাম কার্ড প্রাপ্তরা বিমানবন্দরের ভিআইপি
লাউঞ্জ ব্যবহার করতে পারবেন; বিদেশ ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেটার অব
ইন্ট্রোডাকশন ইস্যু করবে; কার্ড দেখিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করা যাবে; জেলায় সার্কিট হাউজে
কক্ষ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার; জাতীয় পর্যায়ে ও বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলা দেখতে টিকিট প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার এবং সংস্কৃতি
মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাবেন।
অন্য
ট্যাক্স কার্ডধারীরা যেসব সুবিধা পাবেন, সেগুলো হচ্ছে-জেলা প্রশাসন, সিটি
করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ; জেলায়
সার্কিট হাউজে কক্ষ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার; জেলায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ, ট্যাক্স কার্ডধারীর স্বামী/স্ত্রী, নির্ভরশীল পুত্র-কন্যা
ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি জেলার সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধা; বিমান, রেলপথ
ও জলপথে সরকারি যানবাহনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকিট এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে
সিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করতে পারবেন। ট্যাক্স কার্ডের মেয়াদ থাকবে এক বছর।
খসড়া
নীতিমালা অনুযায়ী, ৬ ক্যাটাগরিতে ট্যাক্স কার্ড দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রতিটি ক্যাটাগরিতেই কার্ডের সংখ্যা কমানো হয়েছে। বর্তমান নীতিমালায় বিশেষ
শ্রেণিতে ২৩টি ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়, খসড়া নীতিমালায় এ শ্রেণিতে ১৩ কার্ড রাখা
হয়েছে। একইভাবে পেশাজীবী ক্যাটাগরিতে কার্ডের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমানো হয়েছে।
যেমন ব্যবসায়ী, বেতনভোগী, ডাক্তার, সাংবাদিক, আইনজীবীদের ৫টি করে এবং প্রকৌশলী,
স্থপতি, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, খেলোয়াড়, অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক-গায়িকা এবং অন্যদের
৩টি করে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হতো। খসড়া নীতিমালায় এসব পেশাজীবীদের একটি করে কার্ড
দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে
ঢাকা বিভাগে ৫ জন করে পুরুষ-মহিলা ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন এবং রংপুর,
রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন করদাতাকে ট্যাক্স কার্ড
দেওয়া হবে। পাশাপাশি ৫৬ জেলা থেকে একজন করে পুরুষ-মহিলাকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া
হবে। এছাড়া যেসব শিল্পকে ট্যাক্স কার্ডের আওতায় রাখা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে-ব্যাংকিং
খাত, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক খাত, টেলিকমিউনিকেশন, প্রকৌশল, খাদ্য প্রস্তুতকারী,
জ্বালানি, পাট, স্পিনিং ও টেক্সটাইল, ওষুধ ও রসায়ন, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক
মিডিয়া, রিয়েল এস্টেট, তৈরি পোশাক, চামড়া শিল্প ও স্বাস্থ্যসেবা।