আমদানির সিদ্ধান্তের প্রভাব নেই চালের দামে
মাসখানেক বিরতির পর আবার বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। বাজার
নিয়ন্ত্রণে সরকার গতকাল সোমবার আমদানির প্রস্তুতি শুরু করেছে, কিন্তু তাতে বাজারে
চালের দাম কমেনি। আর ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৬ টাকা পর্যন্ত কমানো হলেও গতকাল নতুন
দামের পণ্য পাননি ক্রেতারা। আজ মঙ্গলবার থেকে সমন্বয় করা দামে সয়াবিন তেল পাওয়া
যেতে পারে।
গতকাল সরকারি সংস্থা ট্রেডিংকরপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা থেকে জানা গেছে, বাজারে সরু চালবিক্রি হচ্ছে (নাজিরশাইল ও মিনিকেট) ৬৪ থেকে ৮০ টাকায়। এক মাস আগে যার দাম ছিল ৫৮থেকে ৬৮ টাকা, অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৭ শতাংশ।মাঝারি চাল (পাইজাম ও লতা) গতকালরাজধানীর বাজারে বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা কেজি। এক মাসের ব্যবধানে এই চালেরদাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর মোটা চালের (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) দামও বেড়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকায়।ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যার কারণে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। এখন সরকার আমদানিরসিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন হলে মিলাররা বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দেন। তাতে বাজারস্থিতিশীল হয়ে আসে। তবে এবার সরকার আমদানির প্রস্তুতি শুরু করলেও বাজারে চালের দামউল্টো এখনো বাড়তির দিকে।সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার,মগবাজার ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত তিন-চার দিনে চালের দাম বেড়েছে একথেকে তিন টাকা। পাইকারি বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।পাড়া-মহল্লার দোকানে মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৩ টাকা দরে। বিআর-২৮৫৫ থেকে ৫৮, মিনিকেট ৬৫ থেকে ৭০ ও নাজিরশাইল মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রিহচ্ছে।
মোহাম্মদপুর কৃষিবাজারের পাইকারি চালের ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন প্রথম আলোকেবলেন, ‘চালের বাজার স্থিতিশীল ছিল, এখন আবার কেজিতে এক-দুই টাকা বাড়তে শুরুকরেছে। শুনেছি, সরকার আমদানি করবে। সেটা হলে মিলাররা চাল ছেড়ে দেবেন, তাতে দামকেজিপ্রতি অন্তত ৫ টাকা কমে আসবে।’এদিকে নতুন করে ভোজ্যতেলের দামসমন্বয় করে লিটারে ৬ টাকা পর্যন্ত কমানো হলেও, বাজারে গতকাল নতুন দামের সয়াবিন তেলবাজারে পাওয়া যায়নি। বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের একজনবিক্রয় প্রতিনিধি মঙ্গলবার থেকে নতুন দামেরসয়াবিন সরবরাহ করা হবে।আজ থেকে ক্রেতারা এক লিটার খোলাসয়াবিন তেল কিনতে পারবেন ১৮০ টাকায়। এত দিন খোলা সয়াবিনের দাম ছিল লিটারে ১৮৫টাকা। আর এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল আজ থেকে বিক্রি হবে ১৯৯ টাকায়, এত দিন যারদাম ছিল ২০৫ টাকা। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল এত দিন ৯৯৭ টাকায়বিক্রি হলেও, এখন দাম কমে দাঁড়াবে ৯৮০ টাকা।বন্যার প্রভাবে বাজারে সব ধরনেরসবজির দাম বেশ চড়া। দু-একটি ছাড়া অধিকাংশ সবজি প্রতি কেজি ৫০-৭০ টাকায় বিক্রিহচ্ছে।এর মধ্যে কয়েকটি সবজির দাম স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ বেশি। এর মধ্যে গতকালরাজধানীতে টমেটো বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। শসা বিক্রি হয়েছে মানভেদেপ্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। আর চায়না গাজর বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৫০
টাকায়।বেগুনের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশিপাইকারি বাজারে আলুর দামও বাড়তির দিকে। গতকাল কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে বড় আলুর ৫কেজির পাল্লা বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। সেই হিসাবে পাইকারিতে প্রতি কেজির দাম পড়ে২৮ টাকা। সেগুনবাগিচা বাজারে আলু খুচরা বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।