শেখ হাসিনার সম্মতি পেলে নগর আ.লীগের সম্মেলন

শিগগির চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে পারে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ। দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি পেলে আগামী জুনে সম্মেলন হতে পারে বলে তিনি জানান।
আজ মঙ্গলবার নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে সন্ধ্যায় সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের এই তথ্য দেন আবু সাঈদ আল মাহমুদ। সকালে নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নগর কমিটির প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরের পর সভার দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় সার্কিট হাউসে। এরপর সন্ধ্যায় আবু সাঈদ আল মাহমুদ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যেহেতু আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরের পরেই গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম মহানগর। তাই মাননীয় সভানেত্রীর সঙ্গে কথা বলে, জুন মাসে ওনার সুবিধামতো সময়ে সম্মেলন সম্পন্ন করতে চাই। ঈদের পরপরই সব অসম্পূর্ণ ইউনিট, থানা ও ওয়ার্ড সম্মেলন করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু সামনে বর্ষা। কোনো দৈব–দুর্বিপাক না ঘটলে জুনের মধ্যে সব শেষ করতে চাই।’
নগর আওয়ামী লীগের দুটি ধারার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত
বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত ইউনিট সম্মেলন নিয়ে এই বিভেদ আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
বিরোধ মীমাংসার জন্য একটি রিভিউ কমিটিও গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্র। তারা ১৫টি থানা
তদারকি বা সাংগঠনিক কমিটি গঠন করেছে।
আবু সাঈদ বলেন, ‘নেতারা আমাদের কথা দিয়েছেন, তাঁরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যাবেন।
সাংগঠনিক প্রধানদের নাম অনুমোদন করেছি। তাঁদের সঙ্গে বিকেলে আবার বৈঠক হয়।
আগামীকাল সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম
নাছির উদ্দীন, মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বসে
সাংগঠনিক কমিটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দেবেন। প্রতিটি সাংগঠনিক দলে নগর আওয়ামী লীগের
কার্যকরী কমিটির সদস্যদের মধ্যে থেকে চারজন থাকবেন।’
ইতিমধ্যে যে ইউনিট সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে, তা নিয়ে কিছু অভিযোগ দাখিল
হয়েছে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বসে পর্যালোচনা করে সেখানে কোনো
অনিয়ম, ব্যত্যয় হয়েছে কি না, দেখে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে জানান আবু
সাঈদ। তিনি বলেন, ‘যদি সমাধান করতে না পারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ
সম্পাদকের মাধ্যমে আমাদের কাছে প্রেরণ করবে। আমরা এগুলো নিয়ে আবার মহানগরের
নেতাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সম্পন্ন করব। এ জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।’
আগামী দিনে সদস্য ফরম বিতরণ, সদস্য সংগ্রহ, নবায়ন কার্যক্রমও সাংগঠনিক দলগুলো তদারক করবে বলে জানান আবু সাঈদ। তিনি বলেন, ‘সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ভালো মানুষ, নতুন প্রজন্ম, যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক কথা বা অভিযোগ নেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাশকতা করেননি এবং যাঁরা সমাজে গ্রহণযোগ্য মানুষ, তাঁদের আওয়ামী লীগে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় দল। কোনো আবর্জনা যাতে না ঢোকে। চট্টগ্রামের নেতাদের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আছে, তাঁরা কোনো অনুপ্রবেশকারীকে দলে স্থান দেবেন না।’
আজকের বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক
সম্পাদক সাংসদ ওয়াসিকা আয়েশা খান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী,
ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া নগর কমিটির
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন,
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম
হোসেন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত
ছিলেন।







